নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
বিশ্বনাথ ইয়থ পিস এ্যাম্বাসেডর গ্রুপ’র উদ্যোগে ও দি হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশ এর এমআইপিএস প্রকল্পের সহযোগিতায় ত্রৈমাসিক সভা সোমবার সকালে বিশ্বনাথ উপজেলার রামপাশা গ্রামের হাছন রাজার বাড়ীতে অনুষ্ঠিত হয়ছে।
ওয়াই পিএজির সমন্বয়কারী আব্দুল কাইয়ূম,র সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্বনাথ পিএফজির পিস এ্যাম্বাসেডর মোনায়েম খান। বিশেষ অতিথি ছিলেন, বিশ্বনাথ পিএফজির আফিয়া বেগম, সমন্বয়কারী বদরুল ইসলাম মহসিন, দি হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশ এর এমআইপিএস প্রকল্পের কুদরত পাশা।
প্রধান অতিথির বক্তবে মোনায়েম খাঁন বলেন, সমাজে শান্তি-সম্প্রীতি রক্ষার করার দায়িত্ব তরুণদেরই নিতে হবে। আমরা তরুণদের মাধ্যেম আগামীর একটি শান্তি-সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়তে চাই।
তিনি বলেন, একটি উদার অসম্প্রাদায়িক, বহুত্ববাদী সহনশীল, মুক্ত, মানবিক সমাজ ও রাষ্ট্র নির্মাণের লক্ষ্যে কাজ করছি আমরা। বিশ্বনাথে রাজনৈতিক, জাতিগত ও ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখার লক্ষে তরুণদের কাজ করতে হবে।
সভায় বক্তারা বলেন, আজকে আমরা এ বাড়িতে সভা করার কারণ হচ্ছে, বিশ্বনাথের ইতিহাস ঐতিহ্য সম্পর্কে তরুণ প্রজন্মকে সচেতন করা। রামপাশা জমিদার বাড়ির মূল প্রতিষ্ঠাতা কে ? তা তারা সঠিকভাবে জানেনা।
তবে একটি সূত্র অনুযায়ী এই জমিদার বাড়ির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে ধরা যায় বিরেন্দ্রচন্দ্র সিংহদেব (বাবু খান)। তিনিই হিন্দু ধর্ম পরিবর্তন করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। হাছন রাজার পিতা দেওয়ান আলী রাজা চৌধুরী ছিলেন উক্ত জমিদারী এলাকার একজন প্রভাবশালী জমিদার। তার আওতায় দুই এস্টেটের অর্থাৎ দুই এলাকার জমিদারী ছিল। একটি ছিল রামপাশার, আরেকটি ছিল সুনামগঞ্জের লক্ষণশ্রীর। হাছন রাজারা ছিলেন দুই ভাই। তার বাবার পরে রামপাশার জমিদারী দেখাশুনা করতেন তার বড় ভাই। আর লক্ষণশ্রীর জমিদারী দেখা করতেন হাছন রাজা। কিন্তু হঠাৎ ৩৯ বছর বয়সে তার বড় ভাই মারা গেলে। দুই জমিদারীর দায়িত্ব এসে পড়ে হাছন রাজার হাতে। এরপরই তিনি এই দুই জমিদারী এলাকা একাই সামলাতে থাকেন। অন্যান্য জমিদার বাড়ি থেকে এই জমিদার বাড়িটি একদমই ভিন্ন। এটি ইতিহাসের পাতায় আলাদা করে জায়গা করে নিয়েছে। কারণ এটি মরমি কবি হাছন রাজার জমিদার বাড়ি।
বক্তারা দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, যারা এটি মেরামত করার দায়িত্ব তারা এই বিল্ডিং ঝুঁকিপূর্ণ সাইনবোর্ড টাঙ্গিয়ে দায়মুক্তি নিতে চাইছে। আমার সিলেট জেলা প্রশাসন, বিশ্বনাথ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও রামপাশা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানকে আহ্বান জানাবো এ বাড়িটি রক্ষনা-বেক্ষণ করে পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত রাখা হোক। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে পর্যটকরা এ বাড়িতে এসে হতাশ হন। আমরা আশা করি বিশ্বনাথের ইতিহাস ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে এ বাড়িটি রক্ষণা বেক্ষণ করা হবে।
সভায় বক্তব্য রাখেন, শাহ টিপু মিয়া, শারিমন আক্তার, লায়েত আহমদ, বাবলি বেগম,হাবিবুর রহমান, হাজেরা বেগম প্রমূখ।